উচ্চশিক্ষায় শিক্ষকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের বিকল্প নেই

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে, যারা স্কুল-কলেজে বেশ ভালো রেজাল্ট রাখলেও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এসে কিছুটা হোঁচট খাই। আর ভিনদেশ হলে তো কথাই নেই। ভিন্ন ভাষা থেকে শুরু করে নতুন সংস্কৃতি ও পরিবেশ, না বলা অনেক পার্থক্যই ধরা পড়ে তখন।

যারা বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী, তাদের প্রায় প্রত্যেকেরই ফান্ডিং হয় কোনো না কোনো অধ্যাপকের মাধ্যমে। এদিক থেকে সামাজিক বিজ্ঞান এবং কলা অনুষদের ফান্ডিং বা স্কলারশিপ ভিন্ন। এই অংশে বেশিরভাগ ফান্ডিংই হয় বিশ্ববিদ্যালয় বা বিভাগের সেন্ট্রাল পর্যায় থেকে। তাই শুরুর দিকে ভিনদেশের শিক্ষার্থী সম্পর্কে অধ্যাপক জানেন কেবল তার অ্যাপ্লিকেশন পর্যায়ে জমা দেওয়া ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র থেকেই।

তাই এখানে প্রায় সব অধ্যাপককেই বলতে শুনি, শ্রেণীকক্ষের বাইরে শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের কোনো বিকল্প নেই।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যা হয়, একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর গবেষণা ও থিসিসের বিষয়ের আগ্রহ পরিবর্তন হয়। কেননা আমাদের দেশে কোর্স বা কারিকুলামে এত বৈচিত্র্য নেই। আবার এখানে নিজ বিভাগের বাইরেও অন্য বিভাগের নির্দিষ্ট কিছু কোর্স নেওয়া যায়। আমার সহপাঠীদের দেখেছি, যোগাযোগ বিভাগে পড়েও অনেকেই মনোবিজ্ঞান বা সাইকোলজি, পাবলিক হেলথ বিভাগ থেকে কোর্স বাছাই করছে। যার ফলে উচ্চশিক্ষার এই সময়টাতে থিসিসের বিষয়েও অনেক পরিবর্তন আসে। আর এই প্রতিটি পর্যায়ে পরামর্শের জন্য প্রয়োজন অধ্যাপকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা।

যুক্তরাষ্ট্রে যেহেতু উচ্চশিক্ষা মানেই গবেষণা, তাই সেমিস্টারের শুরু থেকেই গবেষণা, এর মেথড আয়ত্ত করা প্রয়োজন। এখানে প্রায় প্রত্যেক শিক্ষকই বিভিন্ন গবেষণা, প্রকল্পের কাজে যুক্ত থাকেন। তাই নিজের গবেষণা পরিকল্পনা বা কাজের ইচ্ছা প্রকাশ করলে শিক্ষকের সঙ্গে গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করা যায়। আমার বেশ কিছু সহপাঠী গ্রীষ্মের ছুটির সময়টা গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করেই তিন মাস পাড় করে দিয়েছেন। যেহেতু এসময় সেমিস্টারের কোনো কোর্স এবং ফান্ড কোনোটাই থাকে না, তাই এই গবেষণার কাজটি অভিজ্ঞতা অর্জন ছাড়াও আয়ের উৎস হিসেবে নেয় অনেকে।

আর একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ভিন্ন এক পরিবেশে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হওয়াটাও স্বাভাবিক। দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকা বন্ধুদের কিছু বিষয় দেখে যেমন সহজ মনে হয়েছে, নিজে যখন বাড়ি ছেড়ে প্রথমবারের মতো বিদেশে পড়তে এসেছি, সামান্য বিষয়গুলোও অনেক ঝামেলার মনে হয়েছে।

আমরা নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি দেওয়ার অনেক পরিকল্পনাই করি খুব উৎসাহ নিয়ে, কিন্তু নতুন এক দেশে শুরুর সময়টা প্রতিকূলই বটে। অন্তত যে এই অবস্থার মধ্য দিয়ে যায়, যাকে কখনো বাড়ি ছেড়ে এই আত্মীয়-পরিচয়হীন অঞ্চলে থাকতে হয়নি, তার জন্য তো অবশ্যই। অনেক ক্ষেত্রে এই ছোটখাটো বিষয়গুলো বা অসুস্থতা, হেলথ ইনস্যুরেন্সের নানা পলিসির কারণে পড়ালেখায় প্রভাব পড়ে। আর এখানে গ্রেডিং গেল মানে তো পুরো ফান্ডিংই গেল। তাই নিজের এই বিষয়গুলো সুপারভাইজার বা অ্যাডভাইজারকে জানিয়ে রাখা নিরাপদ। এখানকার শিক্ষকরাও সাধ্যমত চেষ্টা করেন একজন শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্য, তার সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতা করতে। তাই বলা চলে, বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগের কোনো বিকল্প নেই।

                                 

শিক্ষা বার্তা আরো

নতুন বই বিতরণ, সবাইকে দিতে না পেরে উপদেষ্টার দুঃখ প্রকাশ

ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিনে নতুন বই হাতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা। তবে দেশের সব প্রান্তের সব শিক্ষার্থীর হাতে একযোগে নতুন বই তুলে দিতে পারেনি সরকার।

এ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

আজ বুধবার সকালে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, 'নতুন বছরের প্রথম দিনে সারা দেশের সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দিতে না পেরে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে আমরা আন্তরিক দুঃখিত।'

এর আগে, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনটিসিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, 'মাত্র আড়াই মাসে ৪৪১টি বই পরিমার্জন করেছি। ছয় কোটি বই গেছে। চার কোটি ট্রাকে ওঠার অপেক্ষায়।'

তিনি বলেন, 'আগামী ৫ জানুয়ারি প্রাথমিক ও দশম শ্রেণির সব বই, ১০ জানুয়ারি মাধ্যমিকের আটটি বই এবং ২০ জানুয়ারির মধ্যে সব বই পাঠানোর চেষ্টা করব।'

এ বছর প্রায় ৪১ কোটি নতুন বই বিতরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

Wednesday, January 1, 2025

পাঠ্যবইয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদের নাম ভুল ছাপা হয়েছে

পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে জুলাইর ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানের এক শহীদের ভুল নাম ছেপেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।

বাংলা পাঠ্যবইয়ের এক অংশে লেখা হয়েছে, বিক্ষোভ চলাকালীন সময় নাহিয়ান নামে একজন নিহত হয়েছেন। তবে এনসিটিবির কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা প্রকৃতপক্ষে নাফিসা হোসেনের কথা উল্লেখ করতে চেয়েছিলেন।

একই বইয়ে বলা হয়েছে, 'পুলিশের অত্যাচারের বিরুদ্ধে রংপুরে ছাত্রনেতা আবু সাঈদ দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়ান। পুলিশ তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে। এতে আন্দোলন সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সারা দেশের মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। বিশাল এক গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়।'

'ঢাকার উত্তরায় শিক্ষার্থী মীর মুগ্ধ আন্দোলনরত সবাইকে পানি বিতরণ করতে করতে নিহত হন। নিহত হন (গোলাম) নাফিজ, নাহিয়ান, আনাসসহ অগণিত প্রাণ। মায়ের কোলের শিশু, বাবার সাথে খেলতে থাকা শিশু, রিকশাওয়ালা, শ্রমিক, কৃষক, ফেরিওয়ালা, চাকুরিজীবী, মা, পথচারী কেউ বাদ যায় না। সারা দেশে হত্যা করা হয় হাজারো মানুষকে'।

দ্য ডেইলি স্টার উল্লেখিত তিন শহীদ—নাফিজ, নাহিয়ান ও আনাসের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইলে পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সূত্র জানায়, তারা শহীদদের মধ্যে একজন নারীর নাম যুক্ত করতে চেয়েছিলেন। এ ক্ষেত্রে তারা টঙ্গীর সাহাজউদ্দিন সরকার উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের এইচএসসি পরীক্ষার্থী নাফিসার নাম অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্তে উপনীত হন। সাভারে বিক্ষোভ চলাকালীন সময় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের গুলিতে নিহত হন নাফিসা।

'আমি নাহিয়ান নামে কাউকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেইনি', জানান ওই সূত্র।

আদৌ জুলাইর গণঅভ্যুত্থানে নাহিয়ান নামে কেউ শহীদ হয়েছেন কী না, তা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

উৎস আরও জানান, ইতোমধ্যে পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যবইগুলো ছাপাখানায় পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বীকার করেন, তারাও এই ভুলটি চিহ্নিত করেছেন।

তিনি বলেন, 'আমরা এ বিষয়টির সুরাহা করব। আজ স্কুলগুলোতে যে পিডিএফ সংস্করণ পাঠানো হবে, সেটায় আমরা এই ভুলটি সংশোধন করে দেব। স্কুলগুলোতেও আমরা শিগগির একটি সংশোধনী পাঠাব।'

এনসিটিবি কর্মকর্তারা জানান, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় বেশ কয়েকটি পত্রিকায় নৌবাহিনী কলেজের ১৬ বছর বয়সী শিক্ষার্থী গোলাম নাফিজের ছবি ছাপা হয়েছিল। ওই ছবিতে দেখা যায় পুলিশের গুলিতে রক্তাক্ত নাফিজ একটি রিকশার পাদানিতে নিশ্চল অবস্থায় পড়ে আছেন। এ সময় তার মাথায় বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা বাধা ছিল। এই ছবিটি আবু সাঈদ ও মুগ্ধের ছবির মতো গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীকে পরিণত হয়। 

Wednesday, January 1, 2025

ইসলামী শিবিরকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মেরামতের যুদ্ধে প্রস্তুত থাকতে হবে: জামায়াত আমির

ইসলামী ছাত্রশিবিরকে আরেকটি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, সেই যুদ্ধটা হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে মেরামত করার যুদ্ধ।

'শিক্ষা যেহেতু জাতির মেরুদণ্ড, শিক্ষায় বেশি আঘাত করা হয়েছে বেশি। উদ্দেশ্যহীন মানহীন একটা শিক্ষা ব্যবস্থা দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে, যেটা জাতির খুব কম প্রয়োজনে আসছে। এখানে গবেষণা নাই, চর্চা নাই, উৎকর্ষ নাই। নৈতিকতা নাই, দুনিয়ার সঙ্গে তাল মিল নাই। সবকিছুকে একদম তছনছ করে দেওয়া হয়েছে।'

তিনি আজ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রশিবির আয়োজিত সদস্য সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, 'যেহেতু জাতির মেরুদণ্ড, সেখানে তোমাদের শপথ নিতে হবে। আর কোনো চাপাতি কোম্পানিকে, কোনো গাঁজাখোরকে ওখানে ঢুকতে দেওয়া হবে না। হাতে অস্ত্র নিয়ে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। গণরুম যারা কায়েম করে তাদের ওখানে ঢুকতে দেওয়া হবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যারা টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি করে, তাদের ঠিকানা ওখানে হবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুধু শিক্ষা গবেষণা থাকবে। এই দায়িত্ব তোমাদের নিতে হবে।'

তিনি জাতীয় ঐক্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় বা জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হয় এরকম সকল হঠকারী আচরণ থেকে সকলকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করে তিনি বলেন, 'এই বিচার জাতি দেখতে চায়। একজন অপরাধীও যেন বাঁচতে না পারে সেটা দেখতে চায়। যত সময়ই লাগুক, বিচার করতে হবে।'

তিনি বলেন, 'এরা (আওয়ামী লীগ) রাজনৈতিক দল হতে পারে না। যারা ক্ষমতায় বসে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে পারে না, নিজের দেশের মানুষকে হত্যা করে গদি রক্ষার জন্য, তারা কখনো রাজনৈতিক দল হতে পারে না। তারা একটি সন্ত্রাসী দল। সরকার তাদের ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ করেছে। আবরার ফাহাদসহ অসংখ্য মানুষকে হত্যা করে মায়ের বুক খালি করেছে তারা।'

'এরা প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অস্ত্রাগারে পরিণত করেছিল। মদের বোতল আর অস্ত্র দিয়ে ভরে রেখেছিল। গণরুম তৈরি করে নির্যাতন চালাত। নামাজী ছেলেদের শিবির ট্যাগ দিয়ে তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ত।'

তিনি আরও বলেন, 'এটা শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর বুয়েট নয়, সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তারা চরের মতো দখল করে নিয়েছিল। এমনকি আমাদের মেয়েদের বিদ্যাপিঠগুলোও তারা কলুষিত করেছিল।'

তিনি বলেন, '৭১ এ একটা স্বাধীনতা এসেছিল। এ জাতি এনেছিল। কিন্তু স্বাধীনতার মর্মবাণী ডুকরে কেঁদেছিল। কারণ স্বাধীনতার ফসল বাংলাদেশের জনগণের ঘরে উঠেনি। একটা গোষ্ঠী এটা হাইজ্যাক করেছিল। অন্য দেশের হাতে এটা তুলে দিয়েছিল। তার প্রমাণ পাশের দেশের প্রধানমন্ত্রী ২৪ এর বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা দিতে গিয়ে ভারতীয় বাহিনীকে বলেছেন এটা ভারতের দিবস।'

Wednesday, January 1, 2025

নেদারল্যান্ডসে স্নাতকোত্তরে স্কলারশিপের সুযোগ

নেদারল্যান্ডসের ইউনিভার্সিটি অব টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে স্কলারশিপের সুযোগ দিচ্ছে। এই স্কলারশিপে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও নন-ইইউ উভয় দেশের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও এ সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন। নেদারল্যান্ডসের তৃতীয় পলিটেকনিক হিসেবে পরিচিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এই স্কলারশিপের আওতায় থাকা শিক্ষার্থীরা আর্থিক সহায়তা পাবেন।

স্কলারশিপের সুবিধাসমূহ
স্কলারশিপপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা এক বছরের জন্য ৩ হাজার থেকে ২২ হাজার ইউরো পর্যন্ত অর্থ সহায়তা পাবেন (যেখানে ১ ইউরো = ১২৮.৮৬ টাকা, ১০ নভেম্বর ২০২৪)।

আবেদন করার যোগ্যতা
আবেদনকারীকে ইউনিভার্সিটি অব টোয়েন্টির ২০২৫/২০২৬ (সেপ্টেম্বর) সেশনের স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে ভর্তি হতে হবে।
স্টুডেন্ট আইডি নম্বর থাকতে হবে।
ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার প্রমাণ থাকতে হবে। আইইএলটিএসে ৬.৫ বা টোফেলে ৯০ স্কোর প্রয়োজন।

আবেদন প্রক্রিয়া
প্রথমে আবেদনকারীকে ইউনিভার্সিটি অব টোয়েন্টির স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে আবেদন করতে হবে। শর্তসাপেক্ষে ভর্তির অফার লেটার পাওয়ার পর স্টুডেন্ট আইডি নম্বরসহ স্কলারশিপের জন্য আবেদন করা যাবে।

আবেদনের শেষ সময়
২০২৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবেদন করা যাবে।

বিস্তারিত জানতে ও আবেদন করতে অনলাইনে ভিজিট করুন।

2024-11-12

ইংল্যান্ডে পড়াশোনা: খণ্ডকালীন চাকরি ও স্কলারশিপের সুযোগ, আইইএলটিএসে ৬.৫ স্কোর হলে আবেদন

একটি দেশের দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার মূল চালিকা শক্তি দেশটির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সভ্যতা বিনির্মাণ ও সংস্কৃতির সংস্কারের প্রতিটি স্তরে যোগ্য লোকের উপস্থিতি দেশের সার্বিক আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করে। আর এর মধ্যে সুপ্ত থাকে সেখানে বসবাসরত মানুষের মানসম্পন্ন জীবনধারণের বীজ। এ বিষয়গুলো বিচারে ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় দেশটি হলো ইংল্যান্ড। বিশ্ববিখ্যাত সব বিদ্যাপীঠের আশ্রয়স্থল হওয়ায় উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রত্যেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে দেশটিকে ঘিরে ক্যারিয়ার গঠন করার। ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আবেদনের পদ্ধতি, পড়াশোনার খরচ, স্কলারশিপসহ উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন সুবিধাগুলো জেনে নেওয়া যাক—

কেন ইংল্যান্ড সেরা গন্তব্য

ক্যারিয়ার গঠনে ইংল্যান্ড শিক্ষার্থীদের সেরা পছন্দ হওয়ার নেপথ্যের মূলে রয়েছে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। যেকোনো র‌্যাঙ্কিংয়ে দীর্ঘ সময় ধরে শীর্ষ ১০-এ থাকে দেশটির অনেক বিশ্ববিদ্যালয়। কেমব্রিজ, অক্সফোর্ড, ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন ও ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন প্রায়ই শীর্ষে থাকে। তা ছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য সেরা শহর বিবেচনায় এ বছরের শীর্ষ স্থানটি দখল করে আছে লন্ডন। ইংল্যান্ডের জীবনধারণের মানও উন্নত। বিশেষ করে আকর্ষণীয় স্কলারশিপগুলো অর্জনের মাধ্যমে পড়াশোনার পাশাপাশি সেই জীবনধারণের সান্নিধ্যে যেতে পারেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা।

আবেদনের পূর্বশর্ত
অন্য অনেক প্রয়োজনের মধ্যে অন্যতম হলো আইইএলটিএস পরীক্ষায় ৬ থেকে ৬ দশমিক ৫ স্কোর।

আন্ডারগ্রেড প্রোগ্রামগুলোয় ভর্তির জন্য ন্যূনতম ১৩ বছরের একাডেমিক শিক্ষাবর্ষ অতিবাহিত করতে হবে। এখানে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের যোগ্যতা যুক্তরাজ্যের উচ্চমাধ্যমিক বা ন্যাশনাল ডিপ্লোমায় পরিচালিত ‘এ’ স্তরের পরীক্ষার সমতুল্য হওয়া আবশ্যক। আর স্নাতকোত্তর ডিগ্রিতে আবেদনের প্রথম শর্ত হলো স্নাতক পাস করা।

শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ভর্তির জন্য উচ্চমাধ্যমিকে প্রাপ্ত জিপিএ ৮০ ও ৯৫ শতাংশের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। সেখানে ফলাফল ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ হলে আবেদন করা যাবে মাঝারি স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।

কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যেগুলো সর্বশেষ অর্জিত ডিগ্রির মিডিয়াম অব ইনস্ট্রাকশন (এমওআই) ইংরেজি দেখেই আবেদন গ্রহণ করে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভর্তির অন্যতম প্রধান যোগ্যতা থাকে ভালো আইইএলটিএস স্কোর। উপরন্তু স্কলারশিপ দেওয়ায় একাডেমিক যোগ্যতার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষার দক্ষতাকে মূল্যায়ন করা হয়।

স্নাতক অধ্যয়নের জন্য আইইএলটিএস স্কোর ৬ থেকে ৬ দশমিক ৫ থাকতে হয়। প্রি-মাস্টার প্রোগ্রামের জন্য প্রয়োজন হবে ৫ দশমিক ৫ থেকে ৬ স্কোর। সরাসরি স্নাতকোত্তরে আবেদন করতে লাগবে ৬ থেকে ৭ ব্যান্ড স্কোর। অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর নির্ভর করে তা ভিন্ন হতে পারে। এমবিএতে আবেদনের যোগ্যতায় অতিরিক্ত দেখাতে হবে ২ থেকে ৩ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা। এ ক্ষেত্রে আইইএলটিএস ফলাফল ৬ দশমিক ৫ থেকে ৭-এর মধ্যে থাকা জরুরি। আইইএলটিএস ব্যান্ড স্কোরের এ শর্তটি পিএইচডির জন্যও প্রযোজ্য। তবে অবশ্যই স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে।

স্নাতকোত্তরের কোনো কোনো কোর্সে আরও কিছু প্রবেশিকা পরীক্ষার স্কোরের প্রয়োজন হয়। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন হচ্ছে জিআরই ও জিম্যাট।

শীর্ষস্থানীয় ইংলিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো

ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ, ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড, ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন, ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গ, ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার, কিংস কলেজ লন্ডন, লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স, ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টল, ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইক প্রভৃতি।

ইংল্যান্ডগামী ছাত্রছাত্রীরা যে বিষয়গুলো বেশি বাছাই করেন

আইন, ফিজিওথেরাপি, অ্যাকচুয়ারিয়াল সায়েন্স, ক্রীড়া ব্যবস্থাপনা, মনোবিজ্ঞান, ডেটা সায়েন্স, মেডিসিন ও সার্জারি, কম্পিউটার সায়েন্স, বিজনেস স্টাডিজ ও বিজনেস অ্যানালাইটিকস।

আবেদনের উপায়
সাধারণত সামার, অটাম ও স্প্রিং—এ তিনটি সময়ে ইংল্যান্ডের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তির কার্যক্রম শুরু করে। সেখানে সামার মে থেকে জুন পর্যন্ত। সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর অবধি থাকে অটাম এবং জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে চলে স্প্রিং অ্যাডমিশন। তবে ভর্তির মৌসুম নির্বিশেষ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার ন্যূনতম ৯ থেকে ১০ মাস আগে আবেদন শুরু করা উচিত।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
অনলাইনে পূরণ করা আবেদনপত্র

উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণি বা সমমানে ডিপ্লোমার সনদ ও একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট

মিডিয়াম অব ইনস্ট্রাকশন (এমওআই) সার্টিফিকেট (নির্দিষ্ট কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য)

বৈধ পাসপোর্ট

জাতীয় পরিচয়পত্র

ইংরেজি দক্ষতার প্রশংসাপত্র (আইইএলটিএস স্কোর)

পারসোনাল স্টেটমেন্ট

রেফারেন্স লেটার

সিভি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)

স্নাতকোত্তরের জন্য অতিরিক্ত যুক্ত করতে হবে—স্নাতক ডিগ্রির প্রশংসাপত্র, অভিজ্ঞতার প্রশংসাপত্র (এমবিএর জন্য), প্রবেশিকা পরীক্ষার স্কোর, যেমন জিআরই ও জিম্যাট।

পিএইচডি ক্ষেত্রে অতিরিক্ত নথি—স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রির প্রশংসাপত্র, গবেষণা প্রস্তাব

অফার লেটার গ্রহণ
বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ এবং প্রার্থীদের মধ্যকার সাধারণ যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে ই-মেইল। শিক্ষার্থীদের কাগজপত্র যাচাই করে তাঁর ই-মেইল ঠিকানায় দরকারি নির্দেশনা পাঠানো হয়। এই ই-মেইলগুলোর মাধ্যমে সাধারণত অতিরিক্ত প্রয়োজনীয় কাগজ ও প্রবেশিকা পরীক্ষা বা সাক্ষাৎকারের কথা জানানো হয়।

সবদিক মূল্যায়নের পর ভর্তির সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হলে শিক্ষার্থীকে অফার লেটার পাঠানো হয়। ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রে এটি কনফারমেশন অব অ্যাকসেপট্যান্স ফর স্টাডিজ (সিএএস) নামে পরিচিত। এই লেটারটিই ইংল্যান্ডের স্টাডি ভিসার আবেদনের প্রথম শর্ত। সিএএস পাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়।

স্টুডেন্ট ভিসার আবেদনের পদ্ধতি
দীর্ঘমেয়াদি উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ড যেতে হলে দেশটির স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করতে হয়। এটি আগে টায়ার–৪ স্টুডেন্ট ভিসা ছিল। কমপক্ষে ১৬ বা তার বেশি বয়সী ছাত্রছাত্রীরা এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারে।

ভিসার মেয়াদ নির্ভর করে ভর্তি হওয়া কোর্সের সময়কালের ওপর। স্নাতক বা স্নাতকোত্তরের মতো ডিগ্রি পর্যায়গুলোয় অধ্যয়নের জন্য সাধারণত পাঁচ বছর পর্যন্ত ইংল্যান্ডে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়।

ভিসার আবেদনের জন্য এই লিংকে আবেদন করতে হবে। এ সময় ভিসার জন্য দরকারি যাবতীয় কাগজপত্র আপলোডের প্রয়োজন হবে। আবেদন সাবমিটের পর সম্পূর্ণ পূরণ করা অনলাইন ফরমটি ডাউনলোড করে তার একটি প্রিন্ট নিতে হবে।

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
অনলাইনে পূরণ করা আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপি

বয়স ১৮ বছরের কম হলে, মা–বাবার বা অভিভাবকের সম্মতির প্রমাণপত্র

অফার লেটার: সিএএস ও তার সাথে একটি ভিসা লেটার। লেটারটি আবেদনের আগে বিগত সর্বোচ্চ ছয় মাসের মধ্যে ইস্যুকৃত হতে হবে।

বৈধ পাসপোর্ট: যেখানে ইউকে ভিসা সিলের জন্য কমপক্ষে একটি পৃষ্ঠা অবশিষ্ট থাকতে হবে।

তহবিলের প্রমাণ: ন্যূনতম প্রথম বছরের অধ্যয়নের জন্য কোর্স ফি এবং সর্বাধিক ৯ মাস পর্যন্ত জীবনযাত্রার খরচ সংকুলান থাকবে। এর সুস্পষ্ট পরিমাণটি নির্ভর করে প্রার্থী লন্ডনে নাকি, তার বাইরে থেকে পড়াশোনা করবেন, সেটির ওপর। তহবিলটি কমপক্ষে ২৮ দিন ধরে নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে অপরিবর্তিতভাবে থাকতে হবে। অধ্যয়ন ফির বাইরে ৯ মাস পর্যন্ত জীবনযাত্রার খরচ বাবদ যে তহবিলটি দেখাতে হবে, তা হলো—

১। লন্ডনের বাইরের শহরের ক্ষেত্রে প্রতি মাসে ১ হাজার ৩৩৪ পাউন্ড বা ২ লাখ ৯ হাজার ৩০ টাকা (১ পাউন্ড = ১৫৬ দশমিক ৬৯ বাংলাদেশি টাকা)। এটি ৯ মাসে দাঁড়ায় মোট ১৮ লাখ ৮১ হাজার ২৭২ টাকা।

২। লন্ডনে থাকলে মাসে ১ হাজার ২৩ পাউন্ড করে ৯ মাসে মোট ৯ হাজার ২০৭ পাউন্ড (১৪ লাখ ৪২ হাজার ৬৮৫ টাকা)।

স্টুডেন্ট লোন বা স্পনসরশিপ থাকলে লোন বা স্পনসরশিপ প্রদান করা কোম্পানির প্রমাণ

প্রার্থীর যক্ষ্মা টেস্টের ফলাফল

ভিসা ফি প্রদান নিশ্চিতকরণ রসিদ

বিগত শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও মূল মার্কশিট

ইংরেজি ভাষার দক্ষতা প্রমাণ (আইইএলটিএস স্কোর)

প্রবেশিকা পরীক্ষার (জিম্যাট, জিআরই) স্কোর (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)

ভিসা আবেদন জমা ও বায়োমেট্রিক নিবন্ধন
ইংল্যান্ড দূতাবাসে সশরীর আবেদন জমা দেওয়ার আগে অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। এ তারিখ নেওয়ার জন্য এই লিংকে গিয়ে প্রার্থীর নিজস্ব ই-মেইল ঠিকানা দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। এই ই-মেইলেই পাঠানো হবে সাক্ষাৎকার গ্রহণের তারিখ।

দূতাবাসের ঠিকানা: ভিএফএস বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড, নাফি টাওয়ার, ৫৩, গুলশান অ্যাভিনিউ, গুলশান-১, সপ্তম তলা, ঢাকা-১২১২।

নির্ধারিত তারিখে ওপরের ঠিকানায় ভিসার আবেদনের প্রতিটি নথি মূল কপিসহ উপস্থিত হতে হবে। ভিসাকেন্দ্রে সাক্ষাৎকারসহ প্রার্থীর ছবি ও ১০ আঙুলের ছাপ নেওয়া হবে। সবশেষে ভিসা ফি গ্রহণপূর্বক একটি রসিদ দেওয়া হবে। ভিসাযুক্ত পাসপোর্ট নিতে আসার সময় এই রসিদ সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে।

ভিসা প্রক্রিয়াকরণের আনুষঙ্গিক খরচ
স্টুডেন্ট ভিসা ফি ৪৯০ পাউন্ড, ঢাকায় ভিএফএস (ভিসা ফ্যাসিলিটেশন সার্ভিসেস) অনুসারে যা ৭৯ হাজার ২৬৫ টাকা। তবে প্রয়োরিটি ভিসার ফি ৫০০ পাউন্ড বা ৭৮ হাজার ৩৪৭ টাকা, যেখানে সুপার প্রয়োরিটি ভিসার জন্য দিতে হবে ৮০০ পাউন্ড (১ লাখ ২৫ হাজার ৩৫৬ টাকা)।

আবেদনের অংশ হিসেবে এই খরচের সঙ্গে অতিরিক্ত স্বাস্থ্যসেবা সারচার্জ দিতে হয়। এর মাধ্যমে প্রার্থী ইংল্যান্ডের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা লাভ করতে পারেন। এই চার্জ নির্ভর করে সাধারণত ভিসার মেয়াদের ওপর। এই লিংক থেকে এই সারচার্জ বাবদ ঠিক কত খরচ হবে, তা জানা যাবে।

ইংল্যান্ডে পড়াশোনার সম্ভাব্য খরচ
সাধারণত হিউম্যানিটিস, আর্টস ও জেনারেল এডুকেশন কোর্সগুলো বেশ স্বল্প খরচের হয়। অন্যদিকে মেডিসিন ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো বিষয়গুলো যথেষ্ট ব্যয়বহুল। স্নাতক অপেক্ষা স্নাতকোত্তর পর্যায়ের অধ্যয়ন ফি সাধারণত বেশি হয়ে থাকে, যা বিষয়ভেদে ভিন্ন হয়। অন্যান্য দেশের মতোই এমবিএ প্রোগ্রামগুলোর খরচ সর্বাধিক। স্নাতক ডিগ্রির বার্ষিক খরচ ১০ থেকে ২০ হাজার পাউন্ড এবং স্নাতকোত্তরে গড়পড়তায় খরচ হয় প্রতিবছর ১২ থেকে ২২ হাজার পাউন্ড। বার্ষিক ১৫ থেকে ২৪ হাজার পাউন্ড বাজেট রাখতে হবে ডক্টরেট ডিগ্রির জন্য। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পিএইচডি প্রোগ্রামগুলোর জন্য সম্পূর্ণ অর্থায়নের ব্যবস্থা থাকে।

জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে লন্ডনের বাইরে থাকা হলে বাজেট অনেকটাই সাশ্রয়ী হয়ে আসে। শেয়ার করা রুমে থাকার ক্ষেত্রে গড়ে আবাসন খরচ হতে পারে মাসিক ৫৫৪ পাউন্ড। মাসে সম্ভাব্য ইউটিলিটি বিল হতে পারে ৪০ থেকে ৫০ পাউন্ড। খাদ্য ও গৃহস্থালির জন্য রাখতে হবে ১৬০ থেকে ২০০ পাউন্ড। মুঠোফোন বিল ১৫ থেকে ৫০ পাউন্ড। স্টুডেন্ট পাস নিয়ে যাতায়াত করা হলে পরিবহনে ব্যয় হবে প্রায় ৩২ পাউন্ডের (৫ হাজার ১৪ টাকা) মতো।

স্কলারশিপের সুবিধা
কমনওয়েলথ স্কলারশিপ। কমনওয়েলথভুক্ত দেশ হওয়ায় বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীরাও এ স্কলারশিপে আবেদন করতে পারেন। এর আওতায় টিউশন ফি, বিমানভাড়া ও জীবনযাত্রার ভাতা।

ব্রিটিশ কাউন্সিল গ্রেট স্কলারশিপ। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর অধ্যয়নরতদের জন্য এ বৃত্তির মূল্যমান ৫ থেকে ২৫ হাজার পাউন্ড, যা প্রায় ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৪৭২ থেকে ৩৯ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৮ টাকার সমান। এর মধ্যে অনায়াসেই পড়াশোনার অর্থ সংকুলান হয়ে যায়।

চেভেনিং স্কলারশিপ। সম্পূর্ণ অর্থায়নের এ বৃত্তির মধ্যে টিউশন ফি, জীবনযাত্রার খরচ ও বিমানভাড়া পাওয়া যায়। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এই স্কলারশিপ নিয়ে ইংল্যান্ডের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সর্বোচ্চ এক বছর সময়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে পারেন।

খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ কেমন
টায়ার-৪ স্টুডেন্ট ভিসার মধ্যে চাকরিসংক্রান্ত সুবিধাগুলো হচ্ছে-

স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সাবাটিক্যাল অফিসার হিসেবে কাজের সুযোগ।

পেশাদার ক্রীড়াবিদ বা ক্রীড়া প্রশিক্ষক ব্যতীত যেকোনো খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ।

সেমিস্টার চলাকালে শিক্ষার্থীরা এ কাজগুলোর জন্য সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত কর্মঘণ্টা পেয়ে থাকেন। তবে ছুটির সময়ে এ রকম কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকায় ফুলটাইম কাজের সুযোগ থাকে।

অন-ক্যাম্পাস পার্টটাইম চাকরিগুলোর মধ্যে রয়েছে লাইব্রেরি সহকারী, টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট, ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট, নতুন ছাত্রদের জন্য ক্যাম্পাস গাইড ও ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর।

অন্যদিকে অফ-ক্যাম্পাস কাজগুলো হলো গ্রাহক পরিষেবা প্রতিনিধি, বিক্রয় বিশেষজ্ঞ, রেস্তোরাঁ পরিষেবা সহকারী ও ডেলিভারি সহকারী।

এগুলোয় সপ্তাহে গড়ে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫০০ পাউন্ড পর্যন্ত আয় হয়। এ ক্ষেত্রে আয়করের বিষয়টি খেয়াল রাখা জরুরি। কেননা, খণ্ডকালীন চাকরির ওপরও ট্যাক্স ও জাতীয় বিমা ধার্য হয়।

মাসে গড়ে ১ হাজার ৪২ পাউন্ডের (১ লাখ ৬৩ হাজার ২৭৬ টাকা) বেশি উপার্জনকারীদের আয়কর দেওয়া বাধ্যতামূলক। আর সপ্তাহে ১৬৬ পাউন্ডের (২৬ হাজার ১২ টাকা) বেশি আয়কারীদের বিমা ফি পরিশোধ করতে হয়। মূলত নিয়োগকর্তারাই আয়কর ও জাতীয় বিমা ফি কেটে মজুরি দিয়ে থাকেন।

তথ্যসূত্র: ইউএনবি নিউজ

2024-09-09

গেটস কেমব্রিজ স্কলারশিপ, ৩৩ লাখ টাকার সঙ্গে বিমান টিকিটসহ নানা সুবিধা

বিদেশি শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে পিএইচডি, এমএসসি বা এমএলিট বা এক বছরের স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে অধ্যয়নের সুযোগ দিচ্ছে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়। ‘গেটস কেমব্রিজ স্কলারশিপ’ প্রোগ্রামের আওতায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের এ স্কলারশিপ প্রদান করা হবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা এ স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন। কোর্সভেদে আবেদনের শেষ সময়ের ভিন্নতা রয়েছে। কোনো কোর্সে আবেদন ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত। আবার কোনো কোর্সের আবেদনের শেষ সময় ৭ জানুয়ারি ২০২৫।

যুক্তরাজ্যের গেটস কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ ২০০০ সালের অক্টোবরে শুরু হয়েছিল। মাইক্রোসফটের বিল গেটস ও তাঁর স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস তাঁদের ‘বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন’ থেকে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়কে ২২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান দেয়। যুক্তরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া সর্বকালের সবচেয়ে বড় এই অনুদান দিয়েই স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি বৃত্তির সব খরচ বহন করা হয়। এটি যুক্তরাজ্যে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সম্মানজনক বৃত্তি।


বৃত্তির সুযোগ-সুবিধা

*সম্পূর্ণ খরচ, টিউশন ফি প্রদান করবে। সঙ্গে অতিরিক্ত ভাতাও মিলবে।

*পুরো বছরের জন্য রক্ষণাবেক্ষণ ভাতা হিসেবে ২১ হাজার পাউন্ড দেবে। (বাংলাদেশি টাকায় ৩৩ লাখ ৩ হাজার ৩৮১ টাকা, ৫ সেপ্টেম্বরে ১ পাউন্ড সমান

১৫৭ টাকা ৩০ পয়সা ধরে)। পিএইচডি স্কলারদের জন্য চার বছর পর্যন্ত প্রদান করা হবে।

*উড়োজাহাজে যাতায়াতের খরচ।

*ভিসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচ।

*বিভিন্ন কনফারেন্স ও কোর্সে যোগ দিতে কোর্সভেদে ৫০০ থেকে ২ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত ভাতা।

*পারিবারিক ভাতা বাবদ প্রথম সন্তানের জন্য ১১ হাজার ৬০৪ পাউন্ড এবং দ্বিতীয় সন্তানের জন্য ১৬ হাজার ৫৪৮ পাউন্ড মিলবে।

*সঙ্গীর জন্য কোনো ধরনের তহবিল প্রদান করা হবে না।

*পিএইচডির অংশ হিসেবে ফিল্ড ওয়ার্কের সময় মিলবে খরচ।

* মাতৃত্ব/পিতৃত্ব তহবিল ও

*অপ্রত্যাশিত সমস্যা হলে মিলবে তহবিল।

যোগ্যতা

*আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হতে হবে।

*একাডেমিক ফলাফল ভালো হতে হবে।

*অসামান্য মেধাক্ষমতা থাকতে হবে।

*ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হতে হবে।

*প্রোগ্রামটি পছন্দ করার কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।

*নেতৃত্বের সম্ভাবনা।

2024-09-09

উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যকে কেন পছন্দের শীর্ষে রাখবেন

বিদেশে পড়ার সুযোগ মানেই বিশ্বমানের ডিগ্রি পাওয়ার হাতছানি, পেশাগত লক্ষ্য পূরণের অপার সম্ভাবনা। প্রতি পদক্ষেপে নানা দেশের শিক্ষার্থীর সঙ্গে নিজের যোগ্যতা যাচাই করার এ যেন অনন্য সুযোগ। এসব চিন্তা-ভাবনার বাস্তব প্রতিফলন ঘটে প্রস্তুতির সময় সঠিক দেশ বাছাই করতে পারলে।  

জেনে নিন বিদেশে অধ্যয়নের জন্য যুক্তরাজ্যকে বেছে নিলে যেসব সুবিধা পাবেন।

বহু-সংস্কৃতির সঙ্গে মেলবন্ধনের সুযোগ

যুক্তরাজ্যের শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশের সুবাদে সারাবিশ্ব থেকে শিক্ষার্থীর আগমন ঘটে। ফলে একই স্থানে নানা জাতি, গোত্র, সংস্কৃতির দেখা পাবেন এখানে। বৈচিত্র্যময় এমন সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা অন্যান্য দেশে খুব একটা পাওয়া যায় না। এখানকার জাদুঘর, আর্ট গ্যালারি, বাজার, পাব আপনাকে মুগ্ধ করবে অনায়াসে। ক্যাফে ও রেস্তোরাঁর ঘরোয়া খাবারের স্বাদে নিজস্ব সংস্কৃতির ছোঁয়াও পেতে পারেন। এ ছাড়া, যুক্তরাজ্যে পড়তে আসলে বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ তো আছেই।

নানা বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্সের সম্ভার

বিখ্যাত কিংবা স্বল্প-পরিচিত, আপনার আগ্রহের যেকোনো কোর্সে পড়ালেখা করতে পারবেন যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে। যুক্তরাজ্য শুধু সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, অনন্য স্থাপত্য ও চমৎকার পরিবেশে অধ্যয়নের স্থান হিসেবে নয়, অভিজ্ঞতা সংগ্রহের জায়গা হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছে বিশ্বজুড়ে। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজির সঙ্গে ওয়েলস ভাষাতেও কোর্স অফার করে। যুক্তরাজ্যে মেরিন বায়োলজি, ফ্লোরাল সায়েন্স, সার্ফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে ভাষা দক্ষতার অনুশীলন সবধরনের কোর্স করার সুযোগ থাকায় শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে দেশটি।

নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা

যুক্তরাজ্য প্রত্যেক ব্যক্তির ধর্মীয় স্বাধীনতাকে সম্মান জানায়। বিস্তৃত, বৈচিত্র্যময় রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত এ দেশটির সংবিধান আধুনিক ব্রিটেন তৈরিতে বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের পরিসরকে গুরুত্ব দেওয়ায় সব ধর্ম পালনের সুযোগ রয়েছে। ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের মতো দেশের আইন, মানুষের বিশ্বাসের ভিত্তিতে বৈষম্য ও হয়রানি থেকে সুরক্ষা দেয়। যার কারণে চাকরি, শিক্ষা, বাসস্থানের ওপর ধর্মীয় বিশ্বাস প্রভাব ফেলতে পারে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট সোসাইটির সম্পৃক্ততা

ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট সোসাইটি। বিদেশি শিক্ষার্থীদের সাহায্য করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ বা সংরক্ষণশালায় সোসাইটি ও গ্রুপের সদস্যরা সবসময় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। একাডেমিক কোর্সের শিক্ষক, স্টুডেন্ট সাপোর্ট গ্রুপ, ওয়েলফেয়ার টিম ও শিক্ষার্থীদের সংগঠনও এ ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সোসাইটি ও ক্লাবে স্পোর্টস টিম থেকে শুরু করে শখের কাজ, রাজনৈতিক ও মুক্তির আন্দোলন সবধরনের কাজে শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রদান ও দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করে।

সহজ ভর্তি প্রক্রিয়া

যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ। একবার আবেদন গ্রহণ হয়ে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ ও আবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় সব বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রাম বাছাইয়ের আগে সেই বিষয়ে আপনার আগ্রহের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত উত্তর জেনে নিতে হবে এবং আবেদনে তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। নিজেকে যোগ্য হিসেবে তুলে ধরতে ভাষা দক্ষতা, একাডেমিক কৃতিত্বের মতো বিষয়াদি অর্জন করতে হবে।

স্বল্প মেয়াদে ডিগ্রি অর্জন

বিদেশ মানেই জীবনযাত্রার খরচ, চাকরির শর্ত-পূরণের কঠোর বাস্তবতা। এসব মেটাতে গিয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে যায় অনেকের। এজন্য যুক্তরাজ্যের অল্প সময়ে ডিগ্রি অর্জনের সুবিধা শিক্ষার্থীদের জন্য এক আশীর্বাদ। বিভিন্ন স্বল্পমেয়াদী প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীরা কয়েক মাসের ব্যবধানে একাডেমিক ক্রেডিট অর্জনের পাশাপাশি ভিন্নধারার অধ্যয়নের অভিজ্ঞতা নিতে পারে সহজে।

একাধিক স্কলারশিপের সুযোগ

বিদেশে পড়ালেখা নিজ দেশের চেয়ে বেশি ব্যয়বহুল। যুক্তরাজ্যে ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে প্রচুর স্কলারশিপ ও গ্র‍্যান্ট পাওয়ার সুযোগ। যা দিয়ে টিউশন ফি, আবাসন খরচসহ জীবনযাত্রার ব্যয় মেটানো যাবে সহজে। উচ্চশিক্ষা অর্জনের এসব আর্থিক সহায়তার ফান্ড অনেক সময় অব্যবহৃত থেকে যায় যোগ্য শিক্ষার্থীর অভাবে। আপনি অনায়াসে সেই সুযোগ লুফে নিতে পারেন।

চিকিৎসা ও আবাসন সুবিধা

অন্যান্য দেশের তুলনায় যুক্তরাজ্যে জীবনযাত্রা ও চিকিৎসা ব্যয় কিছুটা কম। জীবনযাত্রার খরচ কম হওয়ায় পড়ালেখার খরচও সামলে নেওয়া যায়। এ ছাড়া, যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্যে পাওয়ার সুবিধার জন্য অনেক শিক্ষার্থী সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চায়।

সহজে ভিসা প্রাপ্তি

অন্যান্য দেশের তুলনায় যুক্তরাজ্যে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া সহজ। ভিসা পেতে যুক্তরাজ্যের দূতাবাসে গিয়ে যোগাযোগ করতে পারেন কিংবা ওয়েবপেজে অনলাইনে আবেদন করতে পারেন। ভিসা জটিলতা এড়াতে যাবতীয় তথ্যাদি সম্পর্কে ধারণা নিন। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে রাখুন। ভিসা ইন্টারভিউয়ের জন্য প্রস্তুতি নিন।

2024-09-09

যুক্তরাজ্যে স্কলারশিপ পেতে প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে

অনেক শিক্ষার্থীর জন্য যুক্তরাজ্য স্বপ্নের দেশ হলেও, সবাই সে স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন না। যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষার জন্য বেশ কিছু স্কলারশিপ থাকলেও অধিকাংশ মানুষ মনে করেন সেগুলো খুবই প্রতিযোগিতাপূর্ণ এবং ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। স্কলারশিপের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় জড়িত, যা অনেকে জানেন না। এ বিষয়ে কিছু নির্দেশিকা আবেদন প্রক্রিয়ার জন্য সহায়ক হতে পারে।

দ্য ডেইলি স্টার ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের চতুর্থবারের মতো আয়োজিত ওয়েবিনারে অতিথি বক্তারা যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপ বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দেন এবং আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা করেন। এ ছাড়া ওয়েবিনারে বক্তারা শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপের বিষয়ে বিভিন্ন ভুল ধারণাগুলো দূর করে তরুণদের সঠিক তথ্য জানান।

অধিবেশনের সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের বিড ম্যানেজার এবং ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন সার্ভিসের প্রধান সৈয়দ তীর্থ মাহমুদ। তার সঙ্গে আলোচনায় ছিলেন শেভেনিং স্কলার শুভাশীষ রায়, গ্রেট স্কলার মো. ঈশান আরেফিন হোসেন ও ব্রিটিশ কাউন্সিল উইমেন ইন স্টেম স্কলার উদ্ভাসিতা চক্রবর্তী।

তারা মর্যাদাপূর্ণ শেভেনিং, উইমেন ইন স্টেম ও গ্রেট স্কলারশিপের বিষয়ে আলোচনা করেন এবং যুক্তরাজ্যে আবেদন প্রক্রিয়া, জীবন-যাপন ও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের বিষয়ে কথা বলেন।

ওয়েবিনারে স্কলারশিপের আবেদন প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হয়, যেমন- একটি আবেদন সফল হওয়ার কারণগুলো কী।

মো. ইশান বলেন, 'ভালো স্টেটমেন্ট অব পার্পাস (এসওপি), ভালো একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড এবং আইইএলটিএস স্কোর একটি আবেদনকে আরও বেশি শক্তিশালী করে তোলে।'

শুভাশীষ বলেছেন, 'এসওপি লেখার ক্ষেত্রে সব সময় সাধারণ কথাবার্তার পরিবর্তে নিজের ধারণা থেকে লিখতে হবে। কোনো সমস্যার সমাধান কীভাবে করেন, সে বিষয়ে বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতাগুলোর উদাহরণ দিন। আপনার লক্ষ্য কী এবং কীভাবে সেটা অর্জন করতে চাচ্ছেন সে বিষয়ে ‍লিখুন।'

শুভাশিস আরও বলেন, 'নেটওয়ার্কিং একজন মানুষের ক্যারিয়ারের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ কারণে বিদেশে পড়ালেখা করতে গেলে আপনার নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের চমৎকার সুযোগ পাবেন।'

'যুক্তরাষ্ট্র একটি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ এবং আপনি সেখানে আজীবনের জন্য বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে পারবেন। আপনি সেখানে খণ্ডকালীন চাকরি অথবা নতুন কোনো সুযোগ নিতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আমি সেখানে স্টার্টআপে মাস্টার্স করার সময় হেড অব মার্কেটিং হিসেবে কাজ করেছি। সেখানে এক হ্যালোউইন পার্টিতে একজন প্রতিষ্ঠাতার সঙ্গে আমার দেখা হয়। কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন এবং নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে সেটি খুব ভালো একটি সুযোগ ছিল', বলেন শুভাশিস।

'যুক্তরাজ্যে খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ রয়েছে। আমি একাডেমিয়ায় খণ্ডকালীন কাজ করেছি। বিভিন্ন ওয়েবসাইট রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি আবেদন করতে পারেন', যোগ করেন আরেফিন।

'নতুন দেশে যাওয়ার পর কালচারাল শক হয়, বিষয়টি মনে রাখা উচিত। সেখানে আবহাওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য একটি পরিবর্তন চোখে পড়ে।'

উদ্ভাসিতার জন্য, হোম সিকনেস ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তার মতে, এই ধরনের পরিস্থিতিতে আপনার সবচেয়ে বেশি যা প্রয়োজন তা হলো সহায়তা। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েলবিয়িং সেন্টার আছে এবং বিদেশে জীবন-যাপনে কোনো অসুবিধা হলে তারা সেখানে যেতে পারেন। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের থাকার জায়গা আছে। আপনি চাইলে অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নিতে পারেন, অথবা যদি আরেফিনের মতো ভাগ্যবান হন, তাহলে আপনি আপনার ইচ্ছামতো সব সুযোগ-সুবিধাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে একটি আসন পেতে পারেন।

তারা অধিবেশন শেষে, যারা আবেদন করেছেন অথবা আবেদন করার চিন্তাভাবনা করছেন এমন শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু পরামর্শ দেন।

আরেফিন বলেন, 'নিশ্চিত করুন যে আপনার আবেদনে আপনার ব্যক্তিত্ব এবং আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটেছে। একবার চেষ্টা করে দেখুন এবং প্রয়োগ করুন। আবেদন প্রক্রিয়ার সময়ই আপনি অনেক কিছু খুঁজে পেতে পারেন।'

তিনি আরও বলেন, 'যদি আপনার আগের কোনো রিসার্চ পাবলিকেশন থাকে, তবে আপনার এসওপির সঙ্গে সেগুলোর লিঙ্ক যোগ করুন। আপনার আবেদনটি পার্সোনালাইজড এবং ইতিবাচক হওয়া উচিত।'

আরেফিন ও উদ্ভাসিতা তাদের মাস্টার্স করছেন। শুভাশীষ জানান যুক্তরাজ্যে তার জীবন কেমন কেটেছে। 'আমি সেখানে নতুন এবং উদ্ভাবনী কিছু জিনিস শিখেছি এবং বাংলাদেশে ফিরে এসে সেগুলোর বাস্তবায়ন করেছি। এটি আমার বর্তমান চাকরিতে সাহায্য করে৷'

2024-09-09

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে পড়ার সুযোগ

যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন গ্লোবাল মাস্টার্স স্কলারশিপে সারা বিশ্বের শিক্ষার্থীদের পড়ার সুযোগ দিচ্ছে। যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে বিশ্বমানের শিক্ষা অর্জন করতে আবেদন করতে পারেন।  

এটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টিউশন ফি মওকুফ করার পাশাপাশি অধ্যয়নের সময় অন্যান্য সুবিধা প্রদান করবে। আপনার জ্ঞান এবং সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করতে গ্লোবাল মাস্টার্স স্কলারশিপ হতে পারে অনন্য সুযোগ।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের গ্লোবাল মাস্টার্স স্কলারশিপ ২০২৪-২৫ নিম্নআয়ের দেশের শিক্ষার্থীদের বিশ্বের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার দ্বার উন্মোচন করছে। সারা বিশ্ব থেকে আসা প্রাণবন্ত শিক্ষার্থীরা গুনগত শিক্ষা ও সমৃদ্ধ গবেষণা পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত হতে পারবে। একাডেমিক কৃতিত্বধারী শিক্ষার্থীরা প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে একে অন্যের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারবে। নির্বাচিত আবেদনকারীরা নিজস্ব সম্প্রদায়ের ওপর সত্যিকারের প্রভাব ফেলার মতো জ্ঞান অর্জন করতে পারবে এবং নিজ নিজ ক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় পেশাদার হিসেবে যোগ্যতা প্রমাণ করবে।

বিশ্ববিদ্যালয়টি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রেক্ষাপট থেকে আসা শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময় কমিউনিটি তৈরি করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহযোগিতা, সম্প্রীতির সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে। স্কলারশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টি ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় প্রবেশযোগ্যতা প্রসারিত করে। শিক্ষাগত স্বপ্ন অর্জনের সমান সুযোগ নিশ্চিত করে এবং শিক্ষকদের মধ্যে অন্তর্ভুক্তি, বৈচিত্র্য ও সমতা প্রচার করে।

গ্লোবাল মাস্টার্স স্কলারশিপ ২০২৪-২৫

আয়োজক দেশ: যুক্তরাজ্য
বিশ্ববিদ্যালয়: ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডন
কোর্স স্তর: স্নাতকোত্তর ডিগ্রি
যোগ্যতা: ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থী

সুবিধা

স্কলারশিপপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা বছরে ১৫ হাজার ইউরো অনুদান পাবে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন এবং উচ্চমানের শিক্ষা অর্জনের সুযোগ থাকছে। বৈচিত্র্যময় ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কমিউনিটির অংশ হওয়ার সুযোগ রয়েছে। অধ্যয়ন এবং ভবিষ্যতের কর্মজীবনে সফল হতে সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন একাডেমিক এবং ব্যক্তিগত সহায়তা পরিষেবা পাওয়া যাবে।

স্কলারশিপটি শুধু এক বছরের জন্য প্রযোজ্য। তবে ফুল-টাইম প্রোগ্রামের সময়সীমা দুই বছর হলে প্রতি বছর স্কলারশিপের ৫০ শতাংশ প্রদান করা হবে। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন গ্লোবাল মাস্টার্স স্কলারশিপ অন্যান্য স্কলারশিপ, স্টুডেন্টশিপ, পুরষ্কার বা বার্সারির পাশাপাশি দেওয়া হতে পারে। শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত অন্যান্য তহবিলের মোট মূল্যের ওপর নির্ভর করে পুরস্কারের পরিমাণ সামঞ্জস্য করা যেতে পারে।

আর্থিক প্রয়োজনের ভিত্তিতে এবং শিক্ষার্থী তহবিল অফিসের সুপারিশের ভিত্তিতে স্কলারশিপ প্রদান করা হয়। গ্লোবাল মাস্টার্স স্কলারশিপ পাওয়ার আগে বা পরে কোনো তহবিল পেলে শিক্ষার্থীদের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের শিক্ষার্থী তহবিল অফিসকে বাধ্যতামূলকভাবে জানাতে হবে। এটি পেলে প্রথমে টিউশন ফি মওকুফ করা হয়, তারপর অন্যান্য খরচের জন্য তিন কিস্তিতে বাকি অর্থ প্রদান করা হয়।

যোগ্যতার মানদণ্ড

যুক্তরাজ্যের বাইরের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে। যুক্তরাজ্যে আসার খরচ বহনের সক্ষমতা থাকতে হবে। নিন্মআয়ের পরিবার থেকে আসতে হবে। আবেদনকারীদের ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডনের মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য নির্বাচিত হতে হবে। আবেদনকারী যে প্রোগ্রামে আবেদন করছে, তার জন্য ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের একাডেমিক এবং ইংরেজি ভাষার প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে হবে।

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

পূরণকৃত স্কলারশিপের আবেদনপত্র, সিভি, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের জন্য আপনার অনুপ্রেরণা এবং কীভাবে বৃত্তি আপনার একাডেমিক এবং পেশাদার লক্ষ্যকে সমর্থন করবে তার একটি ব্যক্তিগত বিবৃতি, পূর্ববর্তী গবেষণার অফিসিয়াল কপি, ইংরেজি ভাষার দক্ষতার প্রমাণ।

2024-09-09

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে আবেদনের পিছনে কী উদ্দেশ্য ইমরান খানের?

রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে আটক পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান এক নতুন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছেন। তবে এই নির্বাচন কোনও রাজনৈতিক পদের জন্য নয়, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর বা আচার্য পদের জন্য।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদের নির্বাচনের জন্য প্রার্থী হিসাবে আবেদন করেছেন তিনি।

তিনি যে এই পদের নির্বাচনে অংশ নিতে চলেছেন সে নিয়ে গুঞ্জন অনেক আগে থেকেই শোনা গিয়েছিল। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে, ওই পদের জন্য আবেদনের নির্ধারিত সময়সীমার শেষ দিন (১৮ অগাস্ট) প্রার্থী হিসেবে মি. খানের আবেদন জমা দেওয়া হয়।

ইমরান খানের উপদেষ্টা জুলফি বুখারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম 'এক্স'-এ (সাবেক টুইটারে) এই বিষয়টি সম্পর্কে ঘোষণা করেন।

এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে জুলফি বুখারি লিখেছিলেন, “ইমরান খানের নির্দেশনা অনুযায়ী অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে নির্বাচনের জন্য তার (ইমরান খানের) আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এই ঐতিহাসিক অভিযানে আপনাদের সমর্থন চাই।”

এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ইমরান খানের উপদেষ্টা জুলফি বুখারি সঙ্গে যোগাযোগ করে বিবিসি।

তিনি বিবিসিকে বলেছেন, “ইমরান খান কেন ওই নির্বাচনে অংশ নেবেন না? এটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি পদ।”

“উনি (ইমরান খান) অতীতে ব্র্যাডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ছিলেন এবং তিনি অত্যন্ত সততার সঙ্গে সেই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই তিনিই এই পদের (অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য) জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি।”

প্রসঙ্গত, অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গত বছর গ্রেফতার হন সাবেক ক্রিকেট তারকা ইমরান খান। তারপর থেকে কারাগারে রয়েছেন তিনি ও তার স্ত্রী বুশরা বিবি।

আচার্য পদের জন্য নির্বাচিত হলে বর্তমান পরিস্থিতিতে কীভাবে তিনি এই দায়িত্ব পালন করবেন সে বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে জুলফি বুখারি বলেন, “ওনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা শেষ হয়ে আসছে। (আচার্য পদের) নির্বাচনে জয়ী হলে ডিসেম্বরের মধ্যে তিনি সশরীরে দায়িত্ব পালন করবেন ইনশাল্লাহ।”

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে আবেদন করার এই সিদ্ধান্তের পিছনে মি. খানের কী উদ্দেশ্য রয়েছে, সে সম্পর্কে তার দল পিটিআইয়ের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই পদে ইমরান খান নির্বাচিত হলে তা বেশ উল্লেখযোগ্য বিষয় হবে। একইসঙ্গে এর প্রভাব পড়বে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক স্তরেও।

এখন এই সিদ্ধান্তের পিছনে মি. খানের ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য কী থাকতে পারে এবং তিনি নির্বাচিত হলে তার রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রভাব কী হবে এগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। কিন্তু তার আগে জেনে নেওয়া যাক অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে কীভাবে নিয়োগ করা হয়।

অক্সফোর্ডের চ্যান্সেলর নির্বাচিত হন কীভাবে?

আচার্য পদের জন্য নির্বাচিত প্রার্থীদের দশ বছরের জন্য নিয়োগ করা হয়। প্রসঙ্গত, এটি একটি ‘সেরেমনিয়াল’ বা আনুষ্ঠানিক পদ। আচার্যদের ভাতা বা বেতন দেওয়া হয় না। কোনও রকম প্রশাসনিক দায়িত্ব না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর বা উপাচার্য পদে নিযুক্তি, গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করা, তহবিল সংগ্রহ এবং স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষেত্রে চ্যান্সেলরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

এক অর্থে আচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রদূত।

এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অক্সফোর্ড চ্যান্সেলরের জন্য ব্রিটেনে বসবাস করা জরুরি নয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ভ্রমণ ভাতা দেওয়া হয় এমন সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে আচার্যকে উপস্থিত থাকতে হবে।

ওই পদে নির্বাচনের জন্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিল একটি ‘চ্যান্সেলর নির্বাচন কমিটি’ তৈরি করে। নিয়ম অনুযায়ী, যার কাজ নির্বাচনি প্রক্রিয়া পরিচালনা ও তদারকি করা।

কিন্তু এই কমিটি কোনোভাবেই নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে না।

প্রসঙ্গত, নির্বাচনের ভোটিং পদ্ধতিতে সাম্প্রতিক সংশোধনীর পরেই এই প্রক্রিয়ায় মি. খানের পক্ষে অংশগ্রহণ করা সম্ভব হয়েছে। এই সংশোধনী অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং বর্তমান ও প্রাক্তন কর্মী সদস্যরা এখন থেকে অনলাইনে ভোট দিতে পারবেন।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সারা বিশ্বে আড়াই লাখেরও বেশি যোগ্য ভোটার এখন চ্যান্সেলর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।

আগামী অক্টোবর মাসে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং ২৮শে অক্টোবর থেকে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হবে।

কিন্তু আচার্য পদের জন্য আবেদনকারী প্রার্থীর সংখ্যা যদি দশজনের কম হয়, তাহলে শুধুমাত্র এক দফায় নির্বাচন হবে। অন্যদিকে, নির্বাচনে প্রার্থীদের সংখ্যা বেশি হলে ১৮ই নভেম্বর থেকে দ্বিতীয় দফার নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবে।

এক্ষেত্রে আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, সেখানে কর্মরত ব্যক্তি বা কোনও রাজনৈতিক পদের প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

আচার্য ক্রিস্টোফার ফ্রান্সিস প্যাটেন, যিনি ২০০৩ সাল থেকে এই পদে ছিলেন। গত ৩১শে জুলাই পদত্যাগ করেছেন। বছর আশির ক্রিস্টোফার ফ্রান্সিস প্যাটেন হংকংয়ের শেষ গভর্নর ছিলেন এবং এর আগে ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ারম্যানও ছিলেন।

অক্সফোর্ডে যে বিখ্যাত পাকিস্তানি ব্যক্তিত্বরা পড়েছেন

ইমরান খানসহ একাধিক নামি ব্যক্তিত্ব এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী।

১৯৭২ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন মি. খান। ১৯৭৫ সালে রাজনীতি, দর্শন ও অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে ক্রিকেটে বহু পুরস্কার জিতেছেন। একই সময়ে বেনজির ভুট্টোও অক্সফোর্ডে পড়াশোনা করছিলেন এবং ইমরান খানের মতে, তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল।

ব্রিটেনের প্রাচীনতম ও মর্যাদাপূর্ণ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাদের 'ফেমাস অক্সোনিয়ানস'দের তালিকায় যে পাঁচ পাকিস্তানি ব্যক্তিত্বের নাম উল্লেখ করেছে, তার মধ্যে ৭১ বছরের এই সাবেক ক্রিকেট তারকাও আছেন।

রয়েছেন পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো, তার মেয়ে ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদ লেগারি।

বিখ্যাত অক্সোনিয়ানসদের তালিকায় সেই সেই সমস্ত নামি ব্যক্তিত্বদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যারা এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়েছেন বা এখানে শিক্ষকতা করেছেন, কোনও ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্তরে খ্যাতি অর্জন করেছেন এবং চিরকালের জন্য তাদের নাম ইতিহাসে নথিভুক্ত করেছেন।

এই খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বের মধ্যে রয়েছেন ৫৫ জন নোবেল বিজয়ী, ২৮ জন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, কমপক্ষে ৩০ জন আন্তর্জাতিক নেতা, এবং ১২০ জন অলিম্পিক পদকজয়ী।

ইমরান খান ২০০৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ব্রিটেনের ব্র্যাডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ছিলেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট অনুসারে, আচার্য হিসাবে তার আট বছরের মেয়াদে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যান্সার থেরাপিউটিক্সের নতুন ইনস্টিটিউটের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।

এরপর থেকেই ইমরান খানের শওকত খানুম মেমোরিয়াল হাসপাতাল ও গবেষণা কেন্দ্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে।

ইমরান খান যখন আচার্যের পদ থেকে পদত্যাগ করেন, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ব্রায়ান ক্যান্টর তার প্রশংসা করে বলেছিলেন, “উনি (ইমরান খান) বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একজন বিস্ময়কর রাষ্ট্রদূত এবং আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অসাধারণ রোল মডেল ছিলেন।”

2024-08-25

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফয়েজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক এস. এম. এ. ফয়েজকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন আইন, ১৯৭৩ এর ৪ (১) (এ) ও ৪ (৩) ধারা অনুযায়ী আগামী চার বছরের তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে।

মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. মো. ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, যোগদানের তারিখ থেকে এই নিয়োগাদেশ কার্যকর হবে।

এতে আরও জানানো হয়, অধ্যাপক ফয়েজ প্রচলিত বিধি অনুযায়ী বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন।

2024-09-06

শিক্ষাঙ্গনে জাতীয় রাজনীতি থাকার প্রশ্নে বৃহত্তর সামাজিক ঐকমত্য দরকার: ঢাবি উপাচার্য

শিক্ষাঙ্গনে জাতীয় রাজনীতি থাকবে কি না, এই প্রশ্ন নিয়ে বৃহত্তর সামাজিক ঐকমত্য দরকার বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান।

আজ বুধবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির ব্যাপারে পক্ষে-বিপক্ষে দুই ধরনের মতামতই আছে। সেক্ষেত্রে প্রশাসন কী করবে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে মত প্রকাশের যে ব্যবস্থাগুলো আছে, আমরা সেটাকে সম্মান করি। এগুলোকে কার্যকর করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করব। ছাত্র-শিক্ষকদের মত প্রকাশের ব্যবস্থা থাকার সঙ্গে আমি পুরোপুরি একমত। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, শিক্ষায়তনে রাজনীতি করতে হলে সেটা হবে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট রাজনীতি। আমি কাগজ-কলমের কথা বলব, পাঠ্যক্রমের কথা বলব, সমাজের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক নিয়ে কথা বলব। ছাত্ররাজনীতির মূল এলাকা হবে এটি।'

'শিক্ষাঙ্গনে জাতীয় রাজনীতি থাকবে কি না, এই প্রশ্ন নিয়ে বৃহত্তর সামাজিক ঐকমত্য দরকার, একটি বৃহত্তর সামাজিক চুক্তির দরকার। এই বিষয়গুলো প্রতিষ্ঠানের নিজে থেকে করা কঠিন।'

শিক্ষকদের দলীয় নিয়োগ ও শিক্ষক রাজনীতি প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, 'এটি একটি বড়দাগের বিষয়। এখন আসলে চেষ্টা করব ইমিডিয়েট ক্রাইসিস মোকাবিলার। বিষয়টি যদিও গুরুত্বপূর্ণ। বৈষম্যবিরোধী কথার মধ্যেই দলীয়করণের বিরুদ্ধ সুর আছে। নিয়োগে দলীয়করণ বড়দাগে বৈষম্যবিরোধী আদর্শের বিরুদ্ধে যায়। অংশীজনরা আমার সঙ্গে যদি একমত না হন বা আমাদের সমর্থন না করেন, তাহলে এ ধরনের এজেন্ডা নিয়ে কাজ করা আমাদের জন্য কঠিন হবে।'

'আমাদের শিক্ষা উপদেষ্টার কিছু মতামত আছে। আবেগের বিষয় আছে, পদ্ধতিগত বিষয়, আইনগত বিষয় এর সঙ্গে জড়িত', যোগ করেন তিনি।

'শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা কঠিন চ্যালেঞ্জ হবে' উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, 'এর জন্য সবার সহযোগিতা লাগবে। অংশীজনদের অকুণ্ঠ সমর্থন লাগবে এবং নেতৃত্বের লেগে থাকার মানসিকতা লাগবে। রাতারাতি ফল হবে না। সময় দিয়ে চেষ্টা করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের একটি মৌলিক প্রতিষ্ঠান। এর শেকড় সমাজের গভীরে প্রোথিত। সবকিছু সামলে নিতে বৃহত্তর সামাজিক ঐক্যমত্য লাগবে।'

তিনি বলেন, 'আমার দরজা খোলা। যেকোনো মানুষ আমার সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। সবাই মতামত দেবেন। আমি কারও মতামতে হয়তো একমত হব, কোনো মতামতে হয়তো হবো না। আমি যেহেতু প্রতিষ্ঠানের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলতে চাই, দায়িত্ব নিয়েছি সবার কথা শোনার, তাই আমি দরজা খোলা রাখতে চাই যেকোনো ধরনের পরামর্শের জন্য। পরামর্শ যদি নাও মানি, তার কারণ বলব। কিন্তু, দলমত নির্বিশেষে এই নাজুক সময়ে সবার সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাওয়া খুব প্রয়োজন, সংলাপ থামিয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।'

আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পূর্ণ মাত্রায় চালু করার ব্যাপারেও আশা প্রকাশ করেন নবনিযুক্ত উপাচার্য।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা এই মুহূর্তে একশভাগ নিখুঁত পরিস্থিতির জন্য অপেক্ষা করছি না। যতটুকু পারি শুরু করব। স্মরণকালে এমন পরিস্থিতি কখনো তৈরি হয়নি।'

নিজের অগ্রাধিকারের ব্যাপারে অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ বলেন, 'আমার টিম এক সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণ মাত্রায় কাজ শুরু করতে পারবে বলে আশা করছে। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আমরা ক্রমাগত অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছি। সবার সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়কে চালু করার চেষ্টা করছি। অর্থাৎ আবাসিক হল থেকে শুরু করে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালু করা আমাদের প্রথম লক্ষ্য।'

উপাচার্য বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক যায়গায় অচলাবস্থা আছে। আমি সব মহলে কথা বলার চেষ্টা করছি। এটি সর্বজনীন বিশ্ববিদ্যালয়। এটি আমি খুব আন্তরিকভাবে মনে করি। আমার টিম এখনো পুরোপুরি কার্যভার নেননি। তাদের সহযোগিতার জন্য আমি অপেক্ষা করছি।'

'শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। তাদের যুক্তিসঙ্গত কিছু পরামর্শও আছে। কোনোটা ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের সঙ্গে জড়িত। কোনোটা অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার সঙ্গে জড়িত। সবাই সাধারণভাবে যেসব সমস্যার কথা বলছেন, আমরা সেগুলোকে অগ্রাধিকার দেবো।'

গবেষণা বিষয়ে অধ্যাপক নিয়াজ বলেন, 'এরপরের অগ্রাধিকার হবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব অসাধারণ গবেষক আছেন তাদের সহযোগিতা করা। এটা আমার খুব আগ্রহের জায়গা। আমাদের আগের প্রশাসনও র‍্যাংকিংয়ে এগোনোর জন্য কিছু উদ্যোগ নিয়েছিল। তারা যে ভালো কাজগুলো করেছিলেন, এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হবে।'

'আমাদের ছাত্রদের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়াতে বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। এর শারীরিক ও মানসিক দুই রকম দিক আছে। তাদেরকে ট্রমা থেকে বের করতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। আমি সবার পরামর্শ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করতে থাকব, এটা আমার অঙ্গীকার', যোগ করেন তিনি।

2024-08-28

বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা সীমিত করল অস্ট্রেলিয়া

রেকর্ড পরিমাণ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ায় বিভিন্ন শহরে বাড়ির ভাড়া বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

অভিবাসনে লাগাম টানার উদ্যোগের অংশ হিসাবে বিদেশি শিক্ষার্থী আসার সুযোগ সীমিত করার কথা জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

মঙ্গলবার দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৫ সালে দুই লাখ ৭০ হাজারের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী তালিকাভুক্ত করা হবে না।

রেকর্ড পরিমাণ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ায় বিভিন্ন শহরে বাড়ির ভাড়া বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এক সংবাদ সম্মেলনে অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষামন্ত্রী জেসন ক্লেয়ার বলেন, 'আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মহামারির (কোভিড) আগের তুলনায় এখন প্রায় ১০ শতাংশ বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে এবং আমাদের বেসরকারি বৃত্তিমূলক এবং প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ হার প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি।'

নতুন তালিকাভুক্তির সীমা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এক লাখ ৪৫ হাজারে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এ সংখ্যা হবে ৯৫ হাজার।

সরকার প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাদের সর্বোচ্চ সীমা সম্পর্কে আলাদা করে জানাবে বলে নিশ্চিত করেছেন ক্লেয়ার।

সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কয়েকটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়।

মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিস্তারিত বিবরণ ছাড়াই তাদেরকে একটি সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানটি এখন এই সিদ্ধান্তের আর্থিক এবং অন্যান্য প্রভাব মূল্যায়ন করছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডানকান মাসকেল বলেছেন, 'আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা-সীমা বেঁধে দিলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর, সার্বিকভাবে উচ্চশিক্ষার খাতে এবং সমগ্র জাতির জন্য আগামী কয়েক বছরে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।'

ইউনিভার্সিটি অব সিডনিও জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের সম্ভাব্য প্রভাব তারা পর্যালোচনা করছে।

এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি জানিয়েছে, 'অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে মূল্যবান রপ্তানিগুলোর মধ্যে একটি- আন্তর্জাতিক উচ্চ শিক্ষার নিয়ন্ত্রিত প্রবৃদ্ধিতে সরকার এবং শিক্ষাখাতের সঙ্গে সহযোগিতামূলকভাবে কাজ চালিয়ে যাব।'

দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শীর্ষ সংস্থা ইউনিভার্সিটি অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, সরকারের এই উদ্যোগ এই খাতে 'রাশ টেনে ধরবে।'

লোহার আকরিক, গ্যাস ও কয়লার পর অস্ট্রেলিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম রপ্তানি হিসাবে বিবেচনা করা হয় আন্তর্জাতিক উচ্চশিক্ষাকে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতে এ খাত থেকে আয় হয়েছে ২৪ দশমিক সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় তিন লাখ কোটি বাংলাদেশি টাকা।

2024-08-29

জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা পেতে বাড়ছে ব্লক অ্যামাউন্টের পরিমাণ

দূতাবাসের বিবৃতি মতে, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ব্লক অ্যামাউন্টের পরিমাণ বেড়ে ১১ হাজার ৯০৪ ইউরো হতে যাচ্ছে (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৫ লাখ ৯৭ হাজার টাকা)।

জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা পেতে দেশটির একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কিছু পরিমাণ অর্থ জমা রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই ব্লকড অ্যাকাউন্টে জমার পরিমাণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।

আজ বুধবার বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান দূতাবাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছে

দূতাবাসের বিবৃতি মতে, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ব্লক অ্যামাউন্টের পরিমাণ বেড়ে ১১ হাজার ৯০৪ ইউরো হতে যাচ্ছে (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৫ লাখ ৯৭ হাজার টাকা)। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে নির্ধারিত অ্যামাউন্ট ছিল ১১ হাজার ২০৮ ইউরো (প্রায় ১৫ লাখ টাকা)।

দূতাবাসের ওয়েবসাইটে বলা হয়ছে, জার্মানিতে পৌঁছে জীবনযাপনের খরচ বহন করার সক্ষমতা প্রমাণ করার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনকারীদের একটি ব্লকড ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা এবং সেখানে উল্লেখিত পরিমাণ অর্থ 'ব্লকড' থাকা আবশ্যক।

এ ছাড়াও, শেনজেন ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের এখন থেকে ভিসা ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ভিএফএসকে অগ্রিম প্রসেসিং ফি দিতে হবে। আবেদন করে অনুপস্থিত থাকার প্রবণতা ঠেকাতে এই উদ্যোগ নিয়েছে দূতাবাস।

2024-08-29